কুমির চাষ আর রফতানিতে ‘গাইড’ |
কুদ্দুস আফ্রাদ • ঢাকা |
ছিপছিপে গড়ন। পেশায় ছিলেন গাইড। পেশাগত কারণেই যেতে হত নানা দেশে। পরিচয় হত নানা পেশার মানুষের সঙ্গে। এ পর্যন্ত সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। ২০০৩ সালে হঠাৎ গাইডের কাছ ছেড়ে দিলেন। নেমে পড়লেন ব্যবসায়। কিন্তু সে কি আর যে সে ব্যবসা! এমন ব্যবসার চিন্তা এই অঞ্চলে এর আগে আর কেউ করেননি। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের ওজরআপত্তি ঠেলে ঢাকার ছেলে মুস্তাক আহমেদ ময়মনসিংহের ভালুকায় গিয়ে কয়েক একর জমি কিনে গড়ে তুললেন কুমিরের খামার। আর তাতেই এল সাফল্য। সেই খামার থেকে চলতি বছর জার্মানিতে ১০০টি কুমির রফতানি হয়েছে। যার দাম প্রায় ১ কোটি টাকা। মুস্তাক জানান, আগামী কয়েক বছরে তাঁর ফার্মগুলি থেকে অন্তত ৪-৫ হাজার কুমির রফতানি করা হবে। জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, তাইল্যাণ্ড-সহ বিশ্বের একাধিক দেশে কুমিরের চাহিদা রয়েছে। |
বাংলাদেশের একটি কুমির খামার |
মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে গাইড মুস্তাক হয়ে গেলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত কুমির ব্যবসায়ী। আর তার প্রতিষ্ঠান এখন এই উপমহাদেশের প্রথম কুমির রফতানি কৃতিত্বের দাবিদার। তাঁর দেখানো পথেই বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে কুমিরের বেশ কয়েকটি খামার। এর মধ্যে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় বেষ্টিত বান্দারবানে। আকিজ ওয়াইল্ড লাইফ ফার্মের ব্যবস্থাপনায় নাইখ্যাংছড়ির ধুমধুম ইউনিয়নে ২৫ একর জায়গায় গড়ে উঠেছে কুমির প্রজননের নতুন প্রকল্প। প্রায় ৩৫০টি কুমির রাখার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। স্ত্রী-পুরুষ মিলিয়ে প্রায় ৫০টি অষ্ট্রেলিয়ান প্রজাতির কুমির এখানে রাখা হয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে একটি কুমির আনতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। মুস্তাক জানালেন, এক বছর লালন পালনের পর একটি কুমির থেকে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। মূলত বিদেশে রফতানি করতেই এই খামার গড়ে তোলা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক আনোয়ার হোসেন জানান, খোলা জায়গা এবং খাঁচায়, দুই পদ্ধতিতেই এখানে কুমির চাষ হয়। পাহাড়ের নীচে জলাশয় তৈরি করে সেখানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ২৫টি কুমির। আর খাঁচায় রয়েছে আরও ২৫টি। প্রতি সপ্তাহে ৫ কিলোগ্রাম করে তাদের মাছ খেতে দেওয়া হয়। নয়া প্রকল্প নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মুস্তাক বলছিলেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। সেটা ২০০৩ সাল। তখনও খামারের গোড়া পত্তন হয়নি। ব্যবসা করতে গেলে সরকারি অনুমতি লাগে। কিন্তু এ তো আর এলেবেলে ব্যবসা নয়। একেবারে কুমির চাষ। তাই শুধু ট্রেড লাইসেন্সে চলে না। প্রয়োজন হয় আরও বিভিন্ন দফতরের অনুমতির। আর সেখানেই নানা সমস্যা। হাজারও প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতেই এক বছর কেটে গেল। শেষে ২০০৪-এ ‘রেপটাইল ফার্ম লিমিটেড’-এর সরকারি ছাড়পত্র মিলল। সেই বছরই ডিসেম্বরে ১২-১৪ বছর বয়সের ৭৫টি কুমির আনা হয়। ২০০৭-এ ওই কুমির ১৪০টি ডিম দেয়। ২০০৮-এ পাওয়া যায় ২৪০টি ডিম। পরে ওই ডিম থেকে কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা হয়। বর্তমানে এই খামারে ৮০০-রও বেশি কুমির রয়েছে। মুস্তাক বলেন, নোনা জলের ৪ বছর বয়সী একটা কুমির অন্তত দেড় থেকে ২ হাজার ডলারে বেচা হচ্ছে জার্মানি বা ফ্রান্সের মতো দেশে। কুমিরের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ ও কাঁকড়া চাষ করার কথাও ভাবছেন |
This blog is all about first commercial crocodile farm -"Reptiles Farm Ltd." which started its journey in September 2003.
Reptiles Farm Ltd.
Wednesday, 30 March 2011
কুমির চাষ আর রফতানিতে ‘গাইড’ মুস্তাক পথ দেখালেন বাংলাদেশকে
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment